বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫, আজকে আমরা জানবো আমাদের বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যেতে কত টাকা লাগে। ইতালিতে যাওয়ার দুটি ধরন রয়েছে একটি হচ্ছে সরকারের মাধ্যমে এবং আরেকটি হচ্ছে নিজের ভিসা এবং পাসপোর্ট তৈরি করে। তো আজকে আমরা দুটি মাধ্যমে দেখব যে কোন মাধ্যমে বেশি টাকা লাগে। তো চলুন আজকের পোস্টটি শুরু করা যাক।
বাংলাদেশ-থেকে-ইতালি-যেতে-কত-টাকা-লাগে
পোস্টটি শুরু করার আগে আপনাদের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, অবশ্যই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সম্পর্কে জানবেন এবং তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করবেন। পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনারা এ পোস্টের গুরুত্বপূর্ণ সব কথাগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং তা প্রয়োগ করতে কোন অসুবিধা হবে না বা প্রয়োগের পরও কোন অসুবিধা হবে না। আপনাদের সুবিধার্থে পোষ্টের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো পেজ সূচিপত্র আকারে তুলে ধরা হলো।

পেজ সূচিপত্র:বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে ২০২৫ সালে খরচ নির্ভর করে যাত্রার ধরন, সময় ও ব্যক্তিগত পরিকল্পনার ওপর। সাধারণভাবে বলতে গেলে, ইতালি ভ্রমণের মোট খরচ ধরা যায় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ পড়ে বিমান টিকিটে, যা সাধারণত ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো হয়।
যাত্রার সময় এবং কোন এয়ারলাইনে ভ্রমণ করছো তার ওপর এই দাম বাড়তেও পারে। ভিসা প্রসেসিং ফি ও অন্যান্য কাগজপত্রের খরচ ধরা যায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। থাকার খরচও বড় একটি অংশ, যেখানে বাজেট হোটেলে এক রাতের ভাড়া ৫০ ইউরো থেকে শুরু হলেও, বড় শহর যেমন রোম বা মিলানে দাম আরও বেশি হতে পারে।

খাবার, পরিবহন এবং ঘোরাঘুরির খরচ হিসাব করলে দৈনিক প্রায় ৭০ থেকে ১০০ ইউরো পর্যন্ত লাগতে পারে। যারা সাশ্রয়ীভাবে ভ্রমণ করতে চান, তারা অগ্রিম বুকিং করে সস্তা ফ্লাইট এবং হোস্টেল বেছে নিতে পারেন। এতে মোট খরচ কিছুটা কমে যাবে। আর যারা আরামদায়ক বা বিলাসবহুল ভ্রমণ চান, তাদের বাজেট স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা বেশি হতে হবে। ইতালি ভ্রমণ শুধু খরচের হিসাব নয়, বরং এটি জীবনের এক সুন্দর অভিজ্ঞতা হতে পারে। ভালোভাবে পরিকল্পনা করলে, বাজেটের মধ্যেও ইতালির সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য উপভোগ করা সম্ভব।

বিমান টিকেট খরচ: সময় ও এয়ারলাইনের ভিত্তিতে তুলনা

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার বিমানের টিকিটের দাম অনেকটাই পরিবর্তন হয় সময়, মৌসুম আর এয়ারলাইনের ধরন অনুযায়ী। সাধারণভাবে দেখা যায়, ভ্রমণের সময় যদি ছুটির মৌসুম বা গ্রীষ্মকাল হয়, তখন টিকিটের দাম বেশি থাকে। কারণ এই সময়ে ইউরোপে পর্যটকের ভিড় বেশি থাকে। আবার শীতকাল বা অফ সিজনে একই গন্তব্যের টিকিট অনেক কম দামে পাওয়া যায়।

তাই যারা কম খরচে যেতে চান, তারা ভ্রমণের তারিখটা একটু পরিকল্পনা করে নিতে পারেন। এয়ারলাইনের দিক থেকেও বড় পার্থক্য দেখা যায়। যেমন, সরাসরি ফ্লাইট দেওয়া এয়ারলাইনগুলো যেমন Turkish Airlines, Qatar Airways, Emirates বা Etihad তুলনামূলকভাবে বেশি ভাড়া নেয়। অন্যদিকে কিছু এয়ারলাইন এক বা একাধিক ট্রানজিট সহ ফ্লাইট দেয়, যেখানে যাত্রা একটু বেশি সময় লাগে কিন্তু দাম কিছুটা কম থাকে।

অনেক সময় অনলাইন টিকিট বুকিং সাইটে বিশেষ অফার পাওয়া যায়, সেগুলো নজরে রাখলে ভালো সাশ্রয় করা সম্ভব। অগ্রিম টিকিট কাটা সবসময় লাভজনক, কারণ ভ্রমণের তারিখ ঘনিয়ে এলে দাম বেড়ে যায়। পাশাপাশি লাগেজ নীতিমালা, খাবার সুবিধা বা সিট নির্বাচনের মতো বিষয়গুলোও মোট খরচে প্রভাব ফেলে। তাই শুধু দাম নয়, বরং আরাম, সময় আর সেবার মান মিলিয়ে এয়ারলাইন বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সঠিক পরিকল্পনা থাকলে, ইতালি যাওয়ার বিমানের টিকিটে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খরচ বাঁচানো যায়।

ভিসা প্রক্রিয়া ও ফি: বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য কত লাগবে

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে হলে ভিসা প্রক্রিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সাধারণত ইতালির জন্য শেংগেন ভিসা নেওয়া লাগে, যা পর্যটন, ব্যবসা বা পরিবারিক ভিজিট-সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আবেদন করার আগে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে হয় এবং পরে নির্দিষ্ট ভিসা সেন্টারে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে জমা দিতে হয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।

এই কাগজগুলোর মধ্যে থাকে পাসপোর্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ছবি, হোটেল বুকিং, ভ্রমণ পরিকল্পনা, ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স এবং টিকিটের কপি। সব তথ্য সঠিকভাবে না দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে, তাই সতর্ক থাকা জরুরি। ভিসা ফি নির্ভর করে ভিসার ধরন ও বয়সের উপর। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রায় ৮০ ইউরো ফি দিতে হয়, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১০ হাজার টাকার মতো।
এর সঙ্গে সার্ভিস চার্জ ও ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি ধরলে মোট খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। শিশু বা শিক্ষার্থী ভিসার ক্ষেত্রে খরচ কিছুটা কম হয়। কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাগজপত্র যাচাই বা ইন্টারভিউ প্রয়োজন হতে পারে, সেক্ষেত্রে সময় একটু বেশি লাগে। যারা প্রথমবার আবেদন করছেন, তারা চাইলে অভিজ্ঞ ট্রাভেল এজেন্সির সাহায্য নিতে পারেন।

এতে কাগজপত্র ঠিকভাবে প্রস্তুত করা সহজ হয় এবং ভুলের সম্ভাবনা কমে। আবেদন জমা দেওয়ার পর সাধারণত ১৫ থেকে ২০ কার্যদিবসের মধ্যে ফলাফল জানা যায়। আগে থেকেই পরিকল্পনা করলে পুরো প্রক্রিয়া সহজ ও কম ঝামেলায় সম্পন্ন করা সম্ভব।

হোটেল ও থাকার খরচ: ব্যয়বহুল বনাম বাজেট হোটেল

ইতালি ভ্রমণের সময় থাকার জায়গা নির্বাচন অনেকটাই বাজেটের উপর নির্ভর করে। কেউ যদি আরামদায়ক ও বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা চান, তাহলে ব্যয়বহুল হোটেলই তাদের জন্য সঠিক। এসব হোটেলে সাধারণত রুম সার্ভিস, ফ্রি ব্রেকফাস্ট, জিম, সুইমিং পুল এবং শহরের কেন্দ্রে অবস্থানসহ নানা সুবিধা পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ-থেকে-ইতালি-যেতে-কত-টাকা-লাগে
তবে এই ধরনের হোটেলের ভাড়া সাধারণত প্রতি রাতে ১০০ থেকে ২০০ ইউরোর মধ্যে হয়ে থাকে, বিশেষ করে রোম, মিলান বা ভেনিসের মতো শহরে। অন্যদিকে যারা বাজেট ভ্রমণ পছন্দ করেন, তাদের জন্য ইতালিতে অসংখ্য সাশ্রয়ী থাকার অপশন আছে। বাজেট হোটেল, হোস্টেল বা গেস্টহাউসে রাত কাটানো যায় ৩০ থেকে ৬০ ইউরোর মধ্যে।

অনেক জায়গায় কিচেন ব্যবহার করার সুযোগ থাকে, যা খাবারের খরচও কমিয়ে দেয়। অনলাইন বুকিং সাইটে আগেভাগে রিজার্ভ করলে আরও ভালো ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়। এতে করে কম টাকায় আরামদায়ক থাকা সম্ভব হয়। থাকার জায়গা বাছাইয়ের সময় শুধু দাম নয়, অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ। শহরের কেন্দ্র থেকে দূরে থাকলে ভাড়া কমে, কিন্তু যাতায়াতের খরচ বাড়ে।

তাই ভ্রমণ পরিকল্পনা অনুযায়ী হোটেল বেছে নেওয়াই ভালো। অনেকে Airbnb ব্যবহার করেন, যা পরিবার বা দলে ভ্রমণের জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে। ঠিকঠাক পরিকল্পনা করলে বাজেটের মধ্যেই ইতালিতে আরামদায়ক ও স্মরণীয় থাকা সম্ভব।

খাওয়া-দাওয়া ও দৈনন্দিন খরচের হিসাব

ইতালিতে ভ্রমণের সময় খাওয়া-দাওয়া এবং দৈনন্দিন খরচ অনেকটাই নির্ভর করে কোথায় খাচ্ছেন এবং কীভাবে খরচ পরিকল্পনা করছেন তার ওপর। যদি রেস্টুরেন্টে নিয়মিত খাওয়া হয়, তাহলে দৈনিক খাবারের খরচ সহজেই বেড়ে যেতে পারে। সাধারণ একবেলা লাঞ্চ বা ডিনারে মাঝারি মানের রেস্টুরেন্টে ১৫ থেকে ২৫ ইউরো পর্যন্ত লাগে।
বড় শহর বা পর্যটন এলাকায় দাম আরও বেশি হতে পারে। আর কেউ যদি কফি বা পিজ্জার মতো হালকা খাবার খেতে চান, সেখানে খরচ তুলনামূলক কম, প্রায় ৫ থেকে ১০ ইউরোর মধ্যে। বাজেট ভ্রমণকারীরা চাইলে খাবারের খরচ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারেন। অনেক হোটেল বা হোস্টেলে রান্নাঘরের সুবিধা থাকে, যেখানে নিজের মতো রান্না করা যায়।

স্থানীয় সুপারমার্কেট থেকে উপকরণ কিনে রান্না করলে একদিনের খাবার খরচ ১০ থেকে ১৫ ইউরোর মধ্যেই রাখা সম্ভব। পানির বোতল বা ছোটখাটো স্ন্যাকস বাইরে থেকে না কিনে আগে থেকে সাথে রাখলে তাতেও সাশ্রয় হয়। দৈনন্দিন খরচের মধ্যে পরিবহন, মোবাইল ইন্টারনেট, এবং ছোটখাটো কেনাকাটার ব্যয়ও থাকে। বাস বা মেট্রোর টিকিট সাধারণত ১.৫ থেকে ২ ইউরো, যা সাশ্রয়ী ভ্রমণের জন্য যথেষ্ট। তাই একটু পরিকল্পনা করে চললে ইতালিতে খাওয়া-দাওয়া ও দৈনন্দিন খরচকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

স্থানীয় পরিবহন খরচ: বাস, ট্রেন ও মেট্রো

ইতালিতে ঘোরাঘুরির সময় স্থানীয় পরিবহন খরচ অনেকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই দেশে বাস, ট্রেন আর মেট্রো-তিনটিই বেশ জনপ্রিয় এবং সহজলভ্য। শহরের ভেতরে ঘোরার জন্য বাস এবং মেট্রোই সবচেয়ে সুবিধাজনক। রোম, মিলান বা নেপলসের মতো বড় শহরে মেট্রো সিস্টেম খুবই উন্নত। সাধারণত একবারের টিকিটের দাম ১.৫ থেকে ২ ইউরো, যা দিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়।

অনেকেই দৈনিক বা সাপ্তাহিক পাস কেনেন, যাতে সীমাহীন ভ্রমণ করা যায় কম খরচে। বাস ব্যবস্থাও যথেষ্ট কার্যকর। ছোট শহর বা গ্রামে যাওয়ার জন্য বাসই সেরা বিকল্প। টিকিটের দাম দূরত্ব অনুযায়ী নির্ধারিত হয়, তবে সাধারণত ১ থেকে ৫ ইউরোর মধ্যে থাকে। টিকিট সবসময় আগে থেকেই কিওস্ক বা টিকিট মেশিন থেকে কিনতে হয়, কারণ বাসে ওঠার পর কিনতে গেলে জরিমানা হতে পারে।

ট্রেন ভ্রমণ তুলনামূলক দ্রুত ও আরামদায়ক, বিশেষ করে এক শহর থেকে আরেক শহরে যাওয়ার জন্য। সাধারণ ট্রেনের ভাড়া প্রায় ১০ থেকে ২৫ ইউরো পর্যন্ত, আর হাই-স্পিড ট্রেনে খরচ একটু বেশি হলেও সময় অনেক বাঁচে। অনেকে অনলাইনে আগেভাগে বুকিং করে সস্তা ভাড়া পেয়ে যান। যারা ভ্রমণে বাজেট মেনে চলেন, তাদের জন্য এসব পাবলিক ট্রান্সপোর্টই সবচেয়ে ভালো সমাধান। এতে সময়, খরচ আর ঝামেলা-তিনটিই কমে যায়।

ভ্রমণ বীমা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ

বিদেশ ভ্রমণের আগে অনেকেই শুধু টিকিট আর থাকার খরচ নিয়ে চিন্তা করেন, কিন্তু ভ্রমণ বীমা ও অন্যান্য অতিরিক্ত খরচের দিকেও নজর দেওয়া জরুরি। ভ্রমণ বীমা মূলত নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন, যাতে যাত্রাপথে কোনো দুর্ঘটনা, অসুস্থতা বা লাগেজ হারিয়ে গেলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। সাধারণভাবে এক সপ্তাহের ইউরোপ সফরের জন্য বীমার খরচ পড়ে প্রায় ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে, যা ভ্রমণের সময়কাল ও কভারেজের ওপর নির্ভর করে।
অনেক ভিসা আবেদনেই বীমা বাধ্যতামূলক, তাই আগে থেকেই এটি করে রাখা উচিত। এর বাইরে কিছু আনুষঙ্গিক খরচও থেকে যায়, যা অনেকে প্রথমে ধরেন না। যেমন-ট্রাভেল সিম কার্ড বা রোমিং প্যাকেজ, যা ইন্টারনেট আর কলের জন্য দরকার পড়ে। ইউরোপে পৌঁছে নতুন সিম নিলে খরচ প্রায় ১৫ থেকে ২৫ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।

এছাড়া লাগেজের অতিরিক্ত ওজন, এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার, ট্যাক্সি ভাড়া, কিংবা শহরের প্রবেশ ট্যাক্সের মতো ছোট ছোট খরচ যোগ হয়ে মোট বাজেট বাড়িয়ে দেয়। যদি এসব খরচ আগে থেকেই হিসাবের মধ্যে রাখা যায়, তাহলে ভ্রমণকালে হঠাৎ কোনো সমস্যা হবে না। অনেক সময় অনলাইন বুকিং ফি, টিপস, বা জরুরি কেনাকাটার খরচও আলাদা করে রাখতে হয়। সঠিকভাবে পরিকল্পনা করলে এসব অতিরিক্ত খরচও সহজে সামলানো যায় এবং পুরো সফরটা হয় নির্ভার ও উপভোগ্য।

সাশ্রয়ী ও সুবিধাজনক প্যাকেজ ট্যুরের তুলনা

ইতালি ভ্রমণের জন্য অনেকেই এখন প্যাকেজ ট্যুর বেছে নিচ্ছেন, কারণ এতে পরিকল্পনা করা সহজ হয় এবং বাজেটও নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থা সাশ্রয়ী ও সুবিধাজনক প্যাকেজ অফার করে থাকে, যা ভ্রমণের ধরন, দিন সংখ্যা ও থাকা-খাওয়ার মান অনুযায়ী ভিন্ন হয়। কেউ যদি স্বল্প বাজেটে যেতে চান, তাহলে ৫ থেকে ৭ দিনের প্যাকেজে ফ্লাইট, হোটেল, কিছু খাবার এবং স্থানীয় ট্যুরসহ খরচ ধরা যায় প্রায় ২ লাখ টাকার মধ্যে।

এই ধরনের প্যাকেজে সাধারণত ট্রাভেল গ্রুপের সঙ্গে ঘোরা হয়, যা নতুনদের জন্য আরামদায়ক। অন্যদিকে যারা একটু আরামদায়ক ও ব্যক্তিগত ভ্রমণ চান, তাদের জন্য প্রিমিয়াম প্যাকেজ থাকে যেখানে ফ্লাইট, চার তারকা হোটেল, ব্যক্তিগত গাইড এবং বিশেষ আকর্ষণীয় স্থানে ভ্রমণের সুযোগ থাকে। এই ধরনের প্যাকেজে খরচ কিছুটা বেশি, প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার মধ্যে।

অনেক কোম্পানি কাস্টম প্যাকেজও দেয়, যেখানে নিজের পছন্দ অনুযায়ী গন্তব্য ও দিন ঠিক করা যায়। প্যাকেজ ট্যুর নেওয়ার আগে সবসময় চেক করা দরকার কোন খরচগুলো অন্তর্ভুক্ত এবং কোনগুলো আলাদা দিতে হবে। যেমন ভিসা ফি, বীমা বা ব্যক্তিগত খরচ অনেক সময় প্যাকেজের বাইরে থাকে। আগেভাগে তুলনা করে সঠিক প্যাকেজ বেছে নিলে শুধু খরচই বাঁচে না, বরং পুরো ভ্রমণটা আরও সহজ ও উপভোগ্য হয়।

ইতালিতে বাংলাদেশি পর্যটকের জন্য টিপস ও বাজেট পরিকল্পনা

ইতালি ভ্রমণে যারা বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছেন, তাদের জন্য কিছু পরিকল্পনা থাকলে পুরো সফরটা অনেক সহজ হয়। প্রথমেই বাজেট নির্ধারণ করতে হবে-টিকিট, হোটেল, খাবার আর ঘোরাঘুরির খরচ ধরে মোট কত টাকা লাগতে পারে সেটা আগে থেকে হিসাব করে রাখা ভালো। অনেকেই শেষ মুহূর্তে বুকিং করেন, এতে দাম বেড়ে যায়। তাই অন্তত এক বা দুই মাস আগে ফ্লাইট আর থাকার জায়গা ঠিক করে ফেললে অনেকটা সাশ্রয় হয়।
বাংলাদেশ-থেকে-ইতালি-যেতে-কত-টাকা-লাগে
খাবারের খরচ কমাতে চাইলে দিনে একবেলা বাইরে খেয়ে বাকি খাবার নিজে তৈরি করা যেতে পারে। ইতালির সুপারমার্কেটগুলোতে সাশ্রয়ী দামে নানা রকম খাবার পাওয়া যায়। মেট্রো বা বাসের পাস নিয়ে ঘোরাঘুরি করলে পরিবহন খরচও অনেক কমে যায়। অনেক শহরে সিটি কার্ড নামে বিশেষ পাস পাওয়া যায়, যেটা দিয়ে জাদুঘর, বাস বা ট্রেনে ছাড় মেলে।
বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তার দিকটাও গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। বড় শহরে পকেটমার সমস্যা আছে, তাই ব্যাগ বা ফোনের দিকে খেয়াল রাখা দরকার। এছাড়া ছোট শহর বা গ্রামাঞ্চলে ঘুরলে মানুষের আতিথেয়তা অনেক ভালো, তাই অভিজ্ঞতাও আলাদা হয়। সবশেষে, প্রতিদিনের বাজেট একটু ফ্লেক্সিবল রাখলে ভালো। কারণ হঠাৎ কিছু কেনাকাটা, টিকিট বা খাবারের জন্য বাড়তি টাকা লাগতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা আর কিছু সচেতনতা থাকলে ইতালি ভ্রমণ হতে পারে আনন্দময়, ঝামেলামুক্ত এবং স্মরণীয়।

শেষ কথা:বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫

বাংলাদেশ থেকে ইতালি ভ্রমণের খরচ ২০২৫ সালে কিছুটা বেড়েছে আগের বছরের তুলনায়, কিন্তু ঠিকভাবে পরিকল্পনা করলে এখনো এটি সম্ভব। সাধারণত একজন ভ্রমণকারীর জন্য বিমান ভাড়া সবচেয়ে বড় খরচের জায়গা, যা সময় ও অফার অনুযায়ী প্রায় ৮০,০০০ থেকে ১,২০,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। ভিসা ফি যোগ করলে গড়ে ১০,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকার মতো লাগে।

থাকার জায়গা হিসেবে বাজেট হোটেল বা হোস্টেল বেছে নিলে প্রতিরাত ৩০ থেকে ৫০ ইউরোতে ভালো রুম পাওয়া যায়। খাবার ও স্থানীয় পরিবহন মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৪০ ইউরো ধরলে মোটামুটি ব্যয় ধরা যায়। তাই পুরো ভ্রমণ যদি ৭ থেকে ১০ দিনের হয়, তাহলে সব খরচ মিলে প্রায় ২,৫০,০০০ থেকে ৩,০০,০০০ টাকার মধ্যে থাকা সম্ভব।

আমার মতে, ইতালি ভ্রমণে অগ্রিম টিকিট বুকিং, সস্তা ফ্লাইট বেছে নেওয়া এবং স্থানীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস খরচ অনেক কমিয়ে দেয়। যারা প্রথমবার বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের জন্য ট্যুর এজেন্সির প্যাকেজ তুলনা করে দেখা ভালো, কারণ এতে ভিসা, হোটেল ও ট্রান্সপোর্ট সবকিছু একসাথে পাওয়া যায়। আর ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স নিতে ভুলবেন না, এটি জরুরি মুহূর্তে বড় সহায়তা দেয়। সঠিক পরিকল্পনায় ইতালির রোম, ভেনিস বা মিলানের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় কম খরচে ও নিশ্চিন্তে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লাইফ ব্লেন্ড আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url