বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া যেতে কত টাকা লাগে, আজকে আমরা জানবো বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া যেতে আমাদের কত টাকা লাগে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত বহু সংখ্যক শ্রমিক এবং পর্যটক সার্বিয়া জন্য বাংলাদেশ ছাড়ছে। কিন্তু যারা এখনো সার্বিয়া যায় নাই তারা সার্বিয়া যেতে কেমন খরচ হতে পারে, সার্বিয়া যাওয়ার পর কি কি খরচ হবে সম্পূর্ণ গাইড আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে জানবো। তো চলুন আজকের পোস্টটি শুরু করা যাক।
বাংলাদেশ-থেকে-সার্বিয়া-যেতে-কত-টাকা-লাগে
পোস্টটি শুরু করার আগে আপনাদের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, অবশ্যই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সম্পর্কে জানবেন এবং তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করবেন। পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনারা এ পোস্টের গুরুত্বপূর্ণ সব কথাগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং তা প্রয়োগ করতে কোন অসুবিধা হবে না বা প্রয়োগের পরও কোন অসুবিধা হবে না। আপনাদের সুবিধার্থে পোষ্টের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো পেজ সূচিপত্র আকারে তুলে ধরা হলো।

পেজ সূচিপত্র:বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া যেতে কত টাকা লাগতে পারে সেটা অনেকেরই মনে প্রথম প্রশ্ন হিসেবে আসে। আসলে খরচটা নির্ভর করে আপনি কোন সময় ভ্রমণ করছেন, কোন এয়ারলাইন নিচ্ছেন, আর আপনার ব্যক্তিগত প্ল্যান কেমন। সাধারণভাবে ঢাকা থেকে সার্বিয়ার জন্য ফ্লাইটের ভাড়া বছরের বিভিন্ন সময়ে একটু কমবেশি হয়। কেউ যদি আগে থেকে টিকিট ধরে রাখে, তাহলে খরচ কমে যায়।
আবার হঠাৎ টিকিট নিলে দাম বেশ বাড়ে। ভিসা আবেদন করতে কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র লাগে, আর এর জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি থাকে যা আপনাকে হিসাবের মধ্যে রাখতে হবে। সার্বিয়ায় পৌঁছানোর পর প্রথম কয়েক দিনের থাকার জন্য হোটেল বা গেস্টহাউস বুক করতে হয়, এতে অতিরিক্ত খরচ যোগ হয়। খাবার আর স্থানীয় চলাফেরা খুব ব্যয়বহুল নয়, কিন্তু শুরুতে একটু পরিকল্পনা করে চললে পুরো ভ্রমণ খরচ সহজেই নিয়ন্ত্রণে থাকে।

মোটামুটি ধরে নেওয়া যায় যে ফ্লাইট, ভিসা, থাকার ব্যবস্থা আর দৈনন্দিন ব্যয় মিলিয়ে একটি গড় বাজেট মাথায় রাখলে যাত্রা অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়। যারা প্রথমবার সার্বিয়া যেতে চান, তারা অনলাইনে টিকিট তুলনা করে, আগাম হোটেল বুক করে আর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকঠাক রাখলে পুরো ভ্রমণটা বাজেটের মধ্যে সুন্দরভাবে করা যায়।

সার্বিয়ায় ভ্রমণের উদ্দেশ্য অনুযায়ী খরচের পার্থক্য

    সার্বিয়ায় যাওয়ার খরচ সবার ক্ষেত্রে এক রকম হয় না, কারণ ভ্রমণের উদ্দেশ্য বদলালে পুরো বাজেটও বদলে যায়। কেউ যদি শুধু ঘুরতে যায়, তার জন্য সাধারণভাবে ফ্লাইট, ভিসা, থাকা আর খাবার-এই কয়েকটি খরচই থাকে। পর্যটকদের জন্য হোটেলে কয়েক রাত থাকা, শহরে ঘোরা আর সাধারণ খাবারের খরচ তুলনামূলকভাবে মাঝারি থাকে।
    কিন্তু পড়াশোনার জন্য গেলে হিসাবটা একদম আলাদা হয়ে যায়। স্টুডেন্টদের টিউশন ফি, মেডিকেল ইনস্যুরেন্স, রেসিডেন্স কার্ড আর দীর্ঘমেয়াদি থাকার ব্যয় যোগ হয়ে বাজেট অনেক বড় হয়ে যায়। আবার কাজের উদ্দেশ্যে গেলে প্রথম দিকে কিছু অতিরিক্ত খরচ লাগে। যেমন নথিপত্র যাচাই, অফিসিয়াল আবেদন, বাসা খোঁজা, আর প্রাথমিক সময়ে সেট হতে কিছু বাড়তি ব্যয় যুক্ত হয়।
    কেউ যদি দীর্ঘমেয়াদে থাকতে চায়, তাহলে ভাড়া, বিল, বাজার-সদাই আর মাসিক পরিবহন খরচ নিয়মিত হিসাবের মধ্যে রাখতে হয়। একই সঙ্গে শহরভেদেও কিছু পার্থক্য দেখা যায়। বেলগ্রেডে সাধারণ খরচ একটু বেশি হলেও অন্য শহরে কিছুটা কমে যায়। অনেকে খরচ কমাতে শেয়ার্ড বাসা নেয় বা আগেই অনলাইনে তুলনা করে সিদ্ধান্ত নেয়, এতে বাজেট ধরে রাখা সহজ হয়। তাই কে কেন যাচ্ছে এবং কতদিন থাকবে-এই দুই বিষয় পুরো ভ্রমণ খরচকে প্রভাবিত করে। যে উদ্দেশ্যেই যাত্রা হোক, নিজের পরিকল্পনা আগে ঠিক করলে আর প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নিলে সার্বিয়া ভ্রমণের ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তা কমে যায়।

    ভিসা প্রসেস ও ভিসা ফি বিস্তারিত

    সার্বিয়ার ভিসা প্রসেস নিয়ে অনেকেই একটু চিন্তায় থাকে, কারণ কোথা থেকে শুরু করতে হবে তা পরিষ্কার থাকে না। আসলে ধাপগুলো খুব জটিল নয়, শুধু কাগজপত্র ঠিক মতো প্রস্তুত করলেই কাজটা সহজভাবে এগিয়ে যায়। প্রথমে আপনাকে জানতে হবে কোন ধরনের ভিসা লাগবে। কেউ ঘুরতে যায়, কেউ পড়াশোনার জন্য যায়, আবার কেউ কাজ বা দীর্ঘমেয়াদি থাকার জন্য আবেদন করে।

    ভিসার ধরন অনুযায়ী কয়েকটি কাগজ আলাদা হতে পারে, কিন্তু বেশিরভাগ তথ্য একই থাকে। সাধারণভাবে পাসপোর্ট, ছবি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ট্রাভেল প্ল্যান আর থাকার ঠিকানার প্রমাণ লাগে। পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে, আর স্টেটমেন্টে দেখাতে হবে যে আপনার যাত্রার খরচ চালানোর মতো ব্যালান্স আছে।
    আবেদন ফরম অনলাইনে পূরণ করা যায়, তারপর নির্দিষ্ট সময়ে সরাসরি জমা দিতে হয়। সাক্ষাৎকার থাকলে তা খুব সাধারণ প্রশ্নে হয়, যেমন কেন যাচ্ছেন, কতদিন থাকবেন, কোথায় থাকবেন ইত্যাদি। ভিসা ফি আবেদন করার সময় জমা দিতে হয় এবং এটি ফেরতযোগ্য নয়। খরচটা খুব বেশি নয়, কিন্তু কার্ড বা ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে হয়।

    কাগজগুলো জমা দেওয়ার পর প্রসেসিং টাইম অবস্থার উপর নির্ভর করে কিছুদিন লাগতে পারে। কেউ কেউ দ্রুত পায়, কারও ক্ষেত্রে একটু বেশি সময় লাগে, তাই পরিকল্পনা করার সময় প্রসেসিং টাইম মাথায় রাখা ভাল। যে উদ্দেশ্যে ভিসা নিচ্ছেন সেটার প্রমাণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেমন স্টুডেন্ট হলে ভর্তি চিঠি, কাজের ভিসা হলে নিয়োগপত্র, আর ট্যুরিস্ট হলে ফ্লাইট বুকিং আর হোটেল বুকিং দেয়া দরকার।

    সব কাগজ স্পষ্ট আর মিল থাকা উচিত। ভুল তথ্য দিলে বা কোনো কাগজ অসম্পূর্ণ থাকলে আবেদন ঝুলে যেতে পারে। পুরো প্রক্রিয়ায় শান্তভাবে ধাপে ধাপে এগোলে ভিসা আবেদন কোনো চাপ বোধ হয় না। আগে থেকে কাগজপত্র ঠিক করে রাখা আর আবেদন জমা দেয়ার সময় সতর্ক থাকা-এই দুটোই পুরো কাজকে অনেক সহজ করে দেয়।

    বিমান ভাড়া ও যাতায়াত খরচ

    বিমান ভাড়া আর যাতায়াত খরচ ঠিকভাবে না জানলে সার্বিয়া যাওয়ার বাজেট গড়ে তুলতে সময় লাগে। অনেকেই ভাবে ফ্লাইটের দাম সব সময় এক রকম থাকে, কিন্তু বাস্তবে দাম বেশ পরিবর্তন হয়। কোন মাসে যাচ্ছেন, কত আগে টিকিট নিচ্ছেন, কোন এয়ারলাইন বেছে নিচ্ছেন-সবকিছু মিলেই ভাড়ার ওপর প্রভাব পড়ে। সাধারণত যাত্রার তারিখের বেশ আগে টিকিট নিলে খরচ কম থাকে, আর শেষ মুহূর্তে নিলে দাম হঠাৎ বেড়ে যায়।
    বাংলাদেশ-থেকে-সার্বিয়া-যেতে-কত-টাকা-লাগে
    তাই যারা পরিকল্পনা করে এগোতে চান, তারা আগে থেকেই বিভিন্ন সাইটে ভাড়া তুলনা করে নিলে সুবিধা হয়। ঢাকা থেকে সার্বিয়া যেতে সরাসরি ফ্লাইট নেই, তাই এক বা দুই স্টপ নিয়ে যেতে হয়। এ কারণে টিকিটের দাম মাঝে মাঝে একটু বেশি দেখা যায়। কেউ যদি জনপ্রিয় রুট বা পরিচিত এয়ারলাইন ব্যবহার করে, তাহলে মোটামুটি স্থিতিশীল ভাড়ায় টিকিট পাওয়া যায়।

    আবার কম ভাড়ার অফার পেতে অনেকেই নতুন এয়ারলাইন বা কমন না এমন রুট বেছে নেয়। এতে যাতায়াতের সময় একটু বাড়লেও খরচ কমে যায়। যাত্রীদের জন্য এটা এক ধরনের সুযোগ, যদি সময় নিয়ে সমস্যা না থাকে। যাতায়াত খরচ শুধু বিমান ভাড়াতেই শেষ নয়। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর খরচ, ট্রানজিটে সময় কাটানোর ব্যয়, আর পৌঁছানোর পর প্রথম দিনের পরিবহনও বাজেটে রাখতে হয়।

    কেউ যদি হোটেল থেকে এয়ারপোর্ট পিকআপ নেয়, খরচটা একটু বাড়ে। আবার সাধারণ ট্যাক্সি বা শেয়ার্ড রাইড ব্যবহার করলে কমে যায়। যাত্রার শুরুতে এসব ছোট খরচ খুব তুচ্ছ মনে হলেও সব মিলিয়ে বাজেটে পার্থক্য আনে। যারা প্রথমবার সার্বিয়া যেতে চান, তারা টিকিট নেয়ার আগে ভাড়া তুলনা, ট্রাভেল রুট দেখা আর মোট খরচের একটা হিসাব করলে যাত্রা আরামদায়ক হয়। পরিকল্পনা আগে করলে ভাড়া কমে, যাতায়াত মসৃণ হয়, আর পুরো যাত্রা নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা থাকে না।

    থাকার ব্যবস্থা ও বাসা ভাড়া খরচ

    সার্বিয়ায় থাকার ব্যবস্থা আর বাসা ভাড়ার খরচ অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কোন শহরে থাকবেন, কতদিন থাকবেন আর কী ধরনের রুম বা অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজছেন তার উপর। প্রথমবার গেলে অনেকেই হোটেল বা গেস্টহাউস নেন, কারণ এতে ঝামেলা কম থাকে। হোটেলের ভাড়া সাধারণত রাত অনুযায়ী হিসাব হয়, আর দামটা লোকেশন আর মান অনুযায়ী ওঠানামা করে। কেন্দ্রের কাছাকাছি হোটেল একটু বেশি দামি হয়, আর শহরের বাইরে বা শান্ত এলাকায় তুলনামূলকভাবে কম বাজেটে থাকা যায়।

    যারা বাজেট কমাতে চান, তারা অনেক সময় হোস্টেল বেছে নেন, যেখানে শেয়ার্ড রুমে থাকা যায় আর খরচও কম থাকে। দীর্ঘমেয়াদে থাকতে হলে অ্যাপার্টমেন্ট বা রেন্ট করা বাসাই সবচেয়ে ভালো। এখানে মাসিক ভাড়ার দামে অনেক পার্থক্য দেখা যায়। বেলগ্রেডে ভাড়া সাধারণত একটু বেশি, কারণ শহরটা ব্যস্ত আর সুবিধা বেশি। অন্য শহরগুলোতে একই মানের বাসা তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়।
    কেউ যদি স্টুডেন্ট হন বা নতুন চাকরি নিয়ে যান, তারা প্রায়ই শেয়ার্ড অ্যাপার্টমেন্ট নেন, এতে খরচ অনেকটাই কমে। ভাড়া ছাড়াও কয়েকটি অতিরিক্ত খরচ থাকে, যেমন ইউটিলিটি বিল, ইন্টারনেট, আর মাঝে মাঝে সার্ভিস চার্জ। এসব খরচ মাসে মাসে সামান্য বাড়তে বা কমতে পারে। অনলাইনে বাসা খোঁজা এখন অনেক সহজ, কারণ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বাস্তব ছবি, ভাড়া এবং শর্ত সব দেখা যায়।

    তবে নতুনদের জন্য ভালো হয় যদি আগে থেকে কয়েকটি বাসা তালিকাভুক্ত করে রাখেন এবং পৌঁছানোর পরে সরাসরি দেখে সিদ্ধান্ত নেন। এতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। প্রথম কিছুদিনের জন্য অস্থায়ী থাকার জায়গা বুক করে রাখা নিরাপদ, তারপর ধীরে ধীরে নিজের বাজেট অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি বাসা বেছে নেওয়া যায়। পরিকল্পনা ঠিক থাকলে থাকার খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকে আর নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয়াটাও সহজ হয়ে যায়।

    খাবার, পরিবহন ও দৈনন্দিন খরচ

    সার্বিয়ায় খাবার, পরিবহন আর দৈনন্দিন খরচ কেমন হয় সেটা জানলে নতুন জায়গায় মানিয়ে নেওয়া অনেক সহজ হয়। প্রথমেই খাবারের কথা ধরা যায়। বাইরে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে দাম তুলনামূলক মাঝারি, তবে প্রতিদিন বাইরে খেলে খরচ বেড়ে যায়। যারা একটু হিসেব করে চলতে চান, তারা স্থানীয় সুপারশপ থেকে বাজার করে নিজে রান্না করলে খরচ অনেকটাই কমে।

    সবজি, ফল আর সাধারণ গ্রোসারি খুব বেশি দামি নয়, তাই দীর্ঘমেয়াদে থাকলে ঘরোয়া রান্নাই সাশ্রয়ী হয়। সার্বিয়ার খাবার একটু ভিন্ন স্বাদের হলেও কয়েকদিন পরেই অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া যায়, আর চাইলে নিজের দেশের খাবারও রান্না করা যায়। পরিবহন ব্যবস্থা বেশ সুবিধাজনক। শহরের ভিতরে বাস আর ট্রাম-এই দুইটিই সবচেয়ে জনপ্রিয়। ভাড়া কম, আর যে কেউ সহজেই ব্যবহার করতে পারে।

    বেশি দূরে যেতে হলে ট্যাক্সি ব্যবহার করা যায়, তবে ভাড়া তুলনা করে ওঠা ভালো। কেউ চাইলে পরিবহনের মাসিক পাস নিতে পারে, এতে প্রতিদিন যাতায়াতের খরচ কমে। অনেকেই হাঁটা বা সাইকেল ব্যবহার করে, বিশেষ করে ছোট শহরে। এতে পরিবহন খরচ প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। দৈনন্দিন খরচ বলতে সাধারণত বাজার-সদাই, মোবাইল রিচার্জ, ইন্টারনেট আর ছোটখাটো প্রয়োজনীয় জিনিসের খরচ বুঝায়।

    মোবাইল ডেটা প্যাক খুব বেশি দামি নয়, আর বেশিরভাগ এলাকায় ভালো ইন্টারনেট পাওয়া যায়। সাধারণ ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের দামও manageable, তাই একটু পরিকল্পনা করে চললে মাসিক ব্যয় সীমার মধ্যে রাখা যায়। নতুন দেশ হওয়ায় শুরুতে খরচ একটু বেশি লাগতে পারে, কিন্তু কিছুদিন পর নিজের আরামদায়ক রুটিন ঠিক করে নিলে খরচ স্বাভাবিক হয়ে আসে।

    খাবার, পরিবহন আর দৈনন্দিন খরচ মিলেই পুরো বাজেট গঠন হয়। কে কীভাবে চলবে আর কোথায় থাকবে, তার উপর এসব ব্যয়ের কিছুটা পার্থক্য দেখা দেয়। তবু নিয়মিত হিসাব রাখলে আর অপ্রয়োজনীয় খরচ কমালে সার্বিয়ায় থাকা বেশ স্বস্তির সাথেই সম্ভব।

    স্টুডেন্টদের জন্য সার্বিয়া যাওয়ার খরচ বিশ্লেষণ

    স্টুডেন্ট হিসেবে সার্বিয়া যাওয়ার খরচ অনেকেই জানতে চান, কারণ বিদেশে পড়াশোনা শুরু করার আগে মোট ব্যয় কত হতে পারে তা পরিষ্কারভাবে বোঝা দরকার। এখানে খরচের ধরন অন্য ভ্রমণকারীদের থেকে বেশ আলাদা, কারণ শুধু যাতায়াতের খরচ নয়, দীর্ঘমেয়াদি থাকার ব্যয়ও হিসাবের মধ্যে রাখতে হয়। প্রথমেই থাকে টিউশন ফি।

    কোর্স আর বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী ফি কম বেশি হতে পারে, কিন্তু সাধারণভাবে বছরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রস্তুত রাখা লাগবে। ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠান অগ্রিম কিছু টাকা নিতে পারে, তাই পরিকল্পনা করার সময় এটা মাথায় রাখা ভালো। এরপর আসে থাকা আর দৈনন্দিন ব্যয়। কেউ হলে থাকার সুযোগ পেলে খরচ কমে যায়, কারণ এসব জায়গা স্টুডেন্টদের জন্য নির্দিষ্ট দামে দেয়া হয়।
    তবে অনেক সময় হলে জায়গা পাওয়া যায় না, তখন অ্যাপার্টমেন্ট বা শেয়ার্ড রুম ভাড়া নিতে হয়। মাসিক ভাড়ার সাথে ইউটিলিটি বিল, ইন্টারনেট আর গ্রোসারি যোগ হয়ে মোট খরচ কিছুটা বেড়ে যায়। বাজার করা আর নিজের খাবার রান্না করলে খরচ কমে, আর বাইরে বেশি খেলে ব্যয় বাড়ে-এটাই সাধারণ হিসাব। স্বাস্থ্যবিমা আর রেসিডেন্স কার্ড করার খরচও যুক্ত হয়।

    এগুলো বাধ্যতামূলক, তাই মোট বাজেটে এ অংশ রেখে দেয়া জরুরি। যাতায়াতের খরচ বেশি না হলেও ক্লাসে যাওয়া, বাজার করা বা শহরের ভিতর যাতায়াত করতে নিয়মিতভাবে কিছু খরচ লাগে। অনেক স্টুডেন্ট মাসিক পাস নেয়, এতে ব্যয় কমে। ফ্লাইট আর প্রথম কয়েক দিনের থাকার খরচ একবারই দিতে হয়, কিন্তু মাসিক ব্যয় নিয়মিত।

    তাই কারও বাজেট কম হলে শেয়ার্ড বাসা বা দূরের এলাকায় রুম নিয়ে খরচ কমানো যায়। সব মিলিয়ে স্টুডেন্টদের জন্য সার্বিয়া যাওয়ার হিসাব সাজাতে গেলে টিউশন, থাকা, খাবার, পরিবহন আর সরকারি কাগজপত্র-এই কয়েকটি জিনিসই পুরো বাজেট ঠিক করে দেয়। পরিকল্পনা আগে করলে পড়াশোনার সময় আর্থিক চাপ কম থাকে এবং নতুন দেশে জীবন শুরু করাটা সহজ হয়ে যায়।

    কাজ বা স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে সার্বিয়া যাওয়ার খরচ

    কাজের জন্য বা স্থায়ীভাবে থাকার পরিকল্পনা নিয়ে সার্বিয়া যেতে চাইলে খরচের হিসাব একটু আলাদা হয়ে যায়। কারণ এখানে শুধু যাতায়াত বা প্রথম কয়েক দিনের খরচ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকার মতো ব্যয় মাথায় রাখতে হয়। প্রথমে আসে ডকুমেন্ট প্রস্তুতের খরচ। কাজের অফার থাকলে নিয়োগপত্র, চুক্তি আর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক করতে কিছু ব্যয় হতে পারে।
    এর সাথে যোগ হয় অনুমতি নেওয়ার ফি, যা আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই ধরতে হবে। যাদের পরিবার নিয়ে যেতে হয়, তাদের ক্ষেত্রে কাগজপত্র আর যাচাইয়ের খরচ একটু বাড়ে। এরপর থাকে ফ্লাইট খরচ। যেহেতু সরাসরি ফ্লাইট নেই, তাই এক বা দুই স্টপ নিয়ে যেতে হয়। যাত্রার সময় আর বুকিংয়ের সময় অনুযায়ী টিকিটের দাম ওঠানামা করে।

    নতুন জীবন শুরু করতে গেলে সাধারণত যাওয়ার তারিখ আগে থেকেই ঠিক থাকে, তাই আগেভাগে টিকিট নিলে কিছুটা সাশ্রয় হয়। পৌঁছানোর পর প্রথম সপ্তাহের থাকার ব্যবস্থা আগেই ঠিক করে রাখা ভালো। কেউ হোটেল নেন, কেউ অস্থায়ী অ্যাপার্টমেন্ট নেন। দাম লোকেশন আর রুমের মান অনুযায়ী ভিন্ন হয়। দীর্ঘমেয়াদি থাকার জন্য ভাড়ার বাসা নিতে হবে।

    বড় শহরগুলোতে ভাড়া একটু বেশি, আর ছোট শহরে বা শহরের বাইরে তুলনামূলক কম। মাসিক ভাড়ার সাথে ইউটিলিটি বিল আর ইন্টারনেট যোগ হয়ে মোট ব্যয় তৈরি হয়। প্রথমবার গেলে এক-দু’মাস একটু বেশি খরচ লাগতে পারে, কারণ বাসায় প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হয়। খাবার আর পরিবহনে নিয়মিত খরচ লাগে, তবে নিজের মতো রান্না করলে ব্যয় কমিয়ে আনা যায়।

    কাজের ভিসা বা দীর্ঘমেয়াদি থাকার অনুমতি পেতে কিছু সরকারি ফি দিতে হয়, যা মোট বাজেটের অংশ হিসেবেই ধরতে হয়। সব মিলিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে সার্বিয়া যেতে চাইলে কাগজপত্র, ভাড়া, দৈনন্দিন ব্যয় আর শুরুতে সেটআপ খরচ-এই চারটি বিষয় পুরো বাজেট তৈরি করে। পরিকল্পনা পরিষ্কার থাকলে আর খরচ একে একে ভাগ করে নিলে নতুন দেশে জীবন শুরু করা তুলনামূলক সহজ হয়ে দাঁড়ায়।

    সাশ্রয়ীভাবে সার্বিয়া ভ্রমণের টিপস ও ট্রাভেল গাইড

    সার্বিয়ায় কম খরচে ভ্রমণ করতে চাইলে কিছু সহজ ট্রিকস মানলে খরচ অনেকটাই কমানো যায়। প্রথমেই ফ্লাইটের দাম লক্ষ্য রাখতে হবে। ঢাকা থেকে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় এক বা দুই স্টপের রুট বেছে নিতে হয়। আগে থেকেই টিকিট বুক করলে অনেক সময় সাশ্রয় হয়। অফ-সিজনে ভ্রমণ করলে দাম তুলনামূলক কম থাকে, আর হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে টিকিট নিলে দাম বাড়তে পারে।
    বাংলাদেশ-থেকে-সার্বিয়া-যেতে-কত-টাকা-লাগে
    কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন এয়ারলাইনের দাম তুলনা করে দেখা যায়, এতে সবচেয়ে কম খরচের বিকল্প বেছে নেওয়া যায়। থাকার জন্য হোটেল সবসময় সবচেয়ে সাশ্রয়ী নয়। যদি দীর্ঘমেয়াদি থাকতে চান, শেয়ার্ড রুম বা অস্থায়ী অ্যাপার্টমেন্ট নেওয়া ভালো। এতে মাসিক ভাড়া অনেক কমে যায়। শুরুতে এক বা দুই সপ্তাহের জন্য অস্থায়ী জায়গা বুক করে রাখা সুবিধাজনক, তারপর নিজের বাজেট অনুযায়ী স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
    শহরের বাইরে থাকার খরচ শহরের কেন্দ্রে থাকার তুলনায় অনেক কম। খাবারেও কিছু টিপস কাজে লাগে। বাইরে প্রতিদিন খেলে খরচ বাড়ে, তাই বাজার করে নিজের মতো রান্না করলে বাজেট অনেকটা কমে। স্থানীয় দোকান থেকে সবজি, ফল আর দুধ-মাংস কিনলে খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকে। পরিবহনেও খরচ কমানোর উপায় আছে।

    শহরের গণপরিবহন ব্যবহারে প্রতিদিনের যাতায়াত খরচ কমে, আর ছোট শহরে হাঁটা বা সাইকেল ব্যবহার করলে আরও সাশ্রয় হয়। মোট মিলিয়ে সার্বিয়ায় সাশ্রয়ীভাবে ভ্রমণ করতে চাইলে ফ্লাইট আগে বুক করা, থাকার জায়গা ঠিকভাবে বেছে নেওয়া, নিজের মতো খাবার বানানো আর গণপরিবহন ব্যবহার করা-এই কয়েকটি সহজ কৌশল মেনে চললেই খরচ কমানো যায়। নতুন শহরে মানিয়ে নেওয়াও সহজ হয় এবং পুরো যাত্রা আরামদায়ক হয়ে ওঠে।

    শেষ কথা:বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া যেতে কত টাকা লাগে

    বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া যেতে মোট কত খরচ লাগতে পারে, সেটা মানুষভেদে বদলে যায়। তবে সাধারণভাবে হিসাব করলে একটা ধারণা পাওয়া যায়। প্রথমে ফ্লাইট খরচ ধরতে হয়। ঢাকা থেকে যাওয়া-আসা টিকিট অনেক সময় ওঠানামা করে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মধ্যম রেঞ্জের টিকিট ধরলে মোট খরচটা একটু উচ্চেই থাকে। এরপর আসে ভিসা প্রসেসিং নিয়ে খরচ।

    এতে আবেদন ফি, কাগজপত্র তৈরির খরচ আর কিছু বাড়তি প্রস্তুতি ধরে হিসাব করতে হয়। অনেকেই ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স নেয়, এটা অতিরিক্ত খরচ হিসাবে ধরতে হবে। থাকার খরচও একেকজনের জন্য আলাদা হতে পারে। কেউ হোস্টেলে থাকে, কেউ প্রাইভেট রুম নেয়, তাই মোট খরচ ভিন্ন হয়। খাবার আর পরিবহন ধরলে মাসিক খরচ আরেকটু বাড়ে।

    সার্বিয়ায় দৈনন্দিন জিনিসপত্র খুব বেশি দামী নয়, তবে নতুন দেশে মানিয়ে নিতে গিয়ে শুরুতে একটু বেশি ব্যয় হওয়া স্বাভাবিক। আমার মতে, কেউ যদি পরিকল্পনা করে ধাপে ধাপে বাজেট ঠিক করে নেয়, তবে চাপে পড়তে হয় না। বাড়তি কিছু টাকা হাতে রাখা ভালো, কারণ হঠাৎ প্রয়োজন পড়লে কাজ দেয়। সব মিলিয়ে বললে, মোট খরচটা নির্ভর করে তুমি কোন ধরণের জীবনযাপন করবে আর কীভাবে বাজেট সাজাবে তার উপর। তবে আগে থেকে তথ্য জেনে গেলে পুরো প্রক্রিয়া সহজ মনে হয়।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    লাইফ ব্লেন্ড আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url