কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়-দেখুন
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় এটি আমাদের বাংলাদেশের মানুষের জানা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের বেশিরভাগ দেশের নাগরিক প্রবাসে জীবন কাটাচ্ছে। অনেক
সময় তাদের অর্থের সমস্যা হলে তারা অনেক কষ্টে দিন কাটায়। এর জন্য আমাদের জানা
উচিত যে বাংলাদেশের কোন কোন ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য লোন দেয়। আজকে পোষ্টের
মাধ্যমে আমরা সকল বিস্তারিত জানব।
তো চলুন শুরু করা যাক। সবার কাছে একটি অনুরোধ রইল এ পোস্টটা শেষ পর্যন্ত পড়বেন
এবং থাকবেন। কারণ এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে
জানব। এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক বিষয়ক আমরা জানবো। তাই অনুরোধ করে শেষ
পর্যন্ত থাকবে।
পেট সূচিপত্র:কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়-দেখুন
- কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়
-
ইসলামী ব্যাংক
-
ডাচ বাংলা ব্যাংক
-
অগ্রণী ব্যাংক
-
সোনালী ব্যাংক
-
সিটি ব্যাংক
-
পাবলিক ব্যাংক
-
বর্তমানে যে ব্যাংকগুলো প্রবাসী লোন দিচ্ছে
-
এনসিসি ব্যাংক
-
শেষ কথা: কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়-আমার মতামত
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়
বিদেশে কর্মরত প্রবাসীরা অনেক সময় দেশের পরিবারকে সহায়তা করা বা নতুন কোন
ব্যবসা শুরু করার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন বোধ করেন। এ কারণেই বাংলাদেশে
বেশ কিছু ব্যাংক প্রবাসী লোন বা রেমিটেন্স ভিত্তিক ঋণ প্রদান করে থাকে। এই
ঋণের মাধ্যমে প্রবাসীরা সহজ শর্তে অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন এবং তাদের প্রেরিত
রেমিটেন্স কে কাজে লাগিয়ে আর্থিক স্থিতি আরো মজবুত রাখতে পারেন।
আরো পড়ুন:সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক
বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য আলাদা ঋণ
সুবিধা চালু করেছে। এসব ঋণ সাধারণত কম সুদে, সহজ কিস্তিতে এবং নমনীয় শর্তে
পাওয়া যায়। । ফলে পারিবারিক ব্যয়, বাড়ী নির্মাণ, শিক্ষা খরচ বা ক্ষুদ্র
ব্যবসা পরিকল্পনা প্রবাসী লোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদেরকে এখন জানতে
হবে যে কোন কোন ব্যাংক বাংলাদেশ প্রবাসী লোন সরবরাহ করে থাকে। তো চলুন প্রথমে
সেটা জেনে আসা যাক।
ইসলামী ব্যাংক
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়, এর মধ্যে প্রধান ব্যাংক হিসেবে স্থান
পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক। আমরা অনেকে জানি না যে ইসলামী ব্যাংক ও প্রবাসী লোন
সরবরাহ করে থাকে। বর্তমানে কিছু ব্যাংকের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ইসলামী
ব্যাংক প্রবাসী ব্যাংক দেওয়া শুরু করেছে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম
শক্তিশালী ও শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য ব্যাংকের মধ্যে একটি। ইসলামী ব্যাংক
ভিত্তিক নীতিমালা অনুসরণ করে প্রতিটি গ্রাহককে ঋণ প্রদান করে থাকে। ইসলামী
ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর্থিক খাতে একটি অন্যান্য দৃষ্টান্ত স্থাপন
করেছে।
এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে সুদবিহীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখা এবং ইসলামী
অর্থনীতির ন্যায়নীতি ও আদর্শকে বাস্তবে প্রতিফলিত করা। ইসলামী ব্যাংকের সেবা
দেশের সাধারণ মানুষকে শুরু করে প্রবাসী আয়কারী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য যেসব মানুষ আর্থিক সমস্যার কারণে পিছিয়ে যান,
ইসলামী ব্যাংক তাদের জন্য একটি বিশেষ লোন প্রোগ্রাম চালু করেছে। এই লোনের মূল
উদ্দেশ্য হলো যোগ্য কর্মীদের বিদেশে চাকরি বা ব্যবসা সুযোগ গ্রহণের সহায়তা
করা, যাতে তারা সহজে প্রয়োজনীয় খরচ যেমন ভিসা, টিকিট, মেডিকেল পরীক্ষা ও
প্রশিক্ষণের ব্যয় নির্বাহ করতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন পুরোপুরি শরিয়া সম্মত এবং সুদবিহীন ভাবে
প্রচলিত হয়। এখানে গ্রাহকরা মুতারাবা বা কিস্তি ভিত্তিক অংশীদারিত্বের
নিয়মের ঋণ গ্রহণ করেন। ফলে ঋণ গ্রহণকারী শুধু আর্থিক সহায় না বরং শরিয়া
অনুসারে বৈধভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন। সাধারণত এই লোন তুলনামূলক
ছাড়তে অনুমোদিত হয় এবং গ্রাহকদের কাছে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। এতে করে
প্রবাসী কর্মীরা অপ্রয়োজনীয় সুদের বোঝা ছাড়াই বিদেশে যেতে পারেন এবং তাদের
পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অবদান রাখতে পারেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়-এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকের নাম আসে
ডাচ বাংলা ব্যাংক। তো চলুন যে না সেটা ডাচ বাংলা ব্যাংক কি কি উপায়ে
প্রবাসীদের লোন প্রদান করে থাকে। অন্যতম আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বাণিজ্য
ব্যাংক। বিশেষ করে এটিএম নেটওয়ার্ক, মোবাইল ব্যাংকিং অনলাইন ব্যাংকিং
সেবার মাধ্যমে ডাচ বাংলা ব্যাংক সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাংক হিসেবে পৌঁছে
দিতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ এটিএম নেটওয়ার্ক
এর মালিক এবং সার্বিক সংখ্যক গ্রাহকে কার্ড সেবা প্রদান করছে।
আরো পড়ুন:টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে-জানুন
ডাচ বাংলা ব্যাংকের প্রবাসী লোন্স শরিয়া ভিত্তিক নয়, বরং প্রচলিত
ব্যাংকিং নিয়ম অনুসারে দেওয়া হয়। এখানে গ্রাহকরা নির্দিষ্ট শর্তের রণ
গ্রহণ করতে পারেন। সাধারণত বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা কপি, বিদেশগামী চুক্তিপত্র,
নিয়োগপত্র এবং প্রযোজ্য কাগজপত্র জমা দিতে হয়। ব্যাংক যাচাইবাছাই শেষের
অনুমোদন করে থাকে। ঋণের পরিমাণ, পরিষদের সময়সীমা এবং কিস্তি নির্ধারণ করা
হয় গ্রাহকের আয় ও চাহিদা অনুযায়ী। ফলের বিদেশে যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা সহজে
প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা পান এবং অযথা উচ্চ সুদের ঋণের ঝামেলা এড়াতে
পারেন।
প্রবাসী লোনের আরেকটি সুবিধা হল নিরাপদ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে
রেমিটেন্স প্রেরণ। বিদেশে কর্মরত প্রবাসীরা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে
দেশে অর্থ পাঠাতে পারেন সহজে নিরাপদ উপায়। এতে পরিবার সরাসরি ও প্রকৃত হন
এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডার শক্তিশালী হয়। পাশাপাশি ব্যাংকের মোবাইল
ব্যাংকিং "রকেট" এর মাধ্যমে পরিবার দ্রুত টাকা গ্রহণ করতে পারে। সর্বশেষে
বলা যায়, ডাচ বাংলা ব্যাংকের প্রবাসী লোন কেবল একটি আর্থিক সুবিধা নয়,
বরং প্রবাসী কর্মীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সেতুবন্ধন।
অগ্রণী ব্যাংক
অগ্রণী ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাষ্ট্রীয়ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, যা
দীর্ঘদিন ধরে দেশের সাধারণ মানুষকে আর্থিক সেবা দিয়ে আসছে। বিশেষ করে
বিদেশগামীকর্মীদের জন্য ব্যাংকটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
অনেক সময় প্রবাসে চাকরির সুযোগ পেলেও ভিসা, টিকিট, মেডিকেল পরীক্ষা,
প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য খরচের কারণে অনেকের বিদেশ যাওয়ার অনিশ্চিত হয়ে
পড়ে। এই সমস্যার সমাধান চালু করেছে Agrani Bank Loan for Overseas
Worker (ALOW) নামের প্রবাসী লোন সুবিধা, যা বিদেশগামী কর্মীদের
প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
অগ্রণী ব্যাংক প্রবাসী লোন সাধারণত সহজ শর্তে দেওয়া হয়, যাতে কর্মীরা অযথা
দালাল বা মহাজনী জিনের ফাঁদে না পড়ে। বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা কপি, বিদেশগামী
কর্মসংস্থান চুক্তিপত্র, এএন ওসি এবং প্রয়োজ্য কাগজপত্র জমা দিলে আবেদন করা
যায়। ব্যাংক যাচাই-বাছাই শেষের দুটো ঋণ অনুমোদন করে থাকে। এই ঋণের মাধ্যমে
গ্রাহকরা বিদেশে যাওয়ার খরচ নির্বাহ করতে পারেন এবং একটি স্বপ্ন পূরণের পথে
যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তীতে প্রবাসে আয় থেকে কিস্তি আকারের ঋণ পরিশোধ করা
যায়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, অগ্রণী ব্যাংক প্রবাসী লোন হলো বিদেশ কর্মসংস্থানের সুযোগ
কাজে লাগাতে ইচ্ছুক মানুষের জন্য একটি কার্যকর আর্থিক সহায়তা। এর মাধ্যমে শুধু
একজন ব্যক্তি নয়, তার পরিবার উপকৃত হয় এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক
অবদান রাখে। যারা বৈধ উপায়ে প্রবাসে যেতে চান, তাদের জন্য অগ্রণী ব্যাংক
প্রবাসী লোন একটি নির্ভরযোগ্য ও আস্থা সমাধান হতে পারে।
সোনালী ব্যাংক
সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশে অন্যতম ব্যাংক, যা দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন
করে আসছে। প্রবাসীদের কথা মাথায় রেখে ব্যাংকটি প্রবাসী লোন সুবিধা চালু করেছে,
যাতে তারা বিদেশে থেকে দেশের উন্নয়নের অবদান রাখতে পারে এবং নিজেদের পরিবারের
আর্থিক চাহিদা পূরণের সহায়তা রাখতে পারে। অনেক প্রবাসী কর্মজীবী পরিবারের টাকা
পাঠালেও মাঝে মাঝে জরুরি প্রয়োজনে স্বল্পমেয়াদি অর্থে ঘাটতি দেখা দেয়। সেই
প্রেক্ষাপটে সোনালী ব্যাংকের প্রবাসী লোন একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে।
এই দিনের মাধ্যমে প্রবাসীরা সহজ কিস্তিতে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন।
ঋণ গ্রহণের জন্য সাধারণত বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা, প্রবাসী আয়ের প্রমাণপত্র এবং
ব্যাংকের নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হয়। আবেদন কারিশ সরাসরি দেশে এসে আবেদন করতে
পারেন অথবা অনুমোদিত প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন। ঋণের
পরিমাণ নির্ভর করে আবেদনকারীর আয়, প্রবাসে অবস্থানের সময়কাল এবং প্রয়োজন
কাগজপত্র। সোনালী ব্যাংক সাধারণ গ্রাহকের আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করে দ্রুততম
সময়ের ঋণ অনুমোদন চেষ্টা করে।
সব শেষে বলা যায়, সোনালী ব্যাংকে প্রবাসী লোন প্রবাসীদের জন্য একটি নিরাপদ
আর্থিক সাপোর্ট, যা শুধু ব্যক্তিগত প্রয়োজন নয় বরং দেশে অর্থনীতিতে ইতিবাচক
ভূমিকা রাখে। তাই প্রবাসীরা চাইলে সহজে এই সুবিধা গ্রহণ করে নিজেদের আর্থিক
পরিকল্পনাকে আরো শক্তিশালী করতে পারেন।
সিটি ব্যাংক
সিটি ব্যাংক বাংলাদেশের বেসরকারি একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক, যা দীর্ঘদিন ধরে
গ্রাহকদের জন্য আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য ব্যাংক সেবা প্রদান করে আসছে।
প্রবাসীদের আর্থিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ব্যাংকটি প্রবাসী লোন সুবিধা চালু
করেছে। বিদেশে কর্মরত অনেক বাংলাদেশী পরিবারকে নিয়মিত লিমিটেন্স পাঠালেও,
হঠাৎ জরুরি পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন পড়ে। সিটিব্যাংকের প্রবাসী
লোন সে প্রয়োজনেতা পূরণের কার্যকর ভূমিকা আরেক রাখছে এবং রেখে আসবে।
এই ঋণের গ্রহণের জন্য প্রবাসীদের বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা, রেমিট্যান্স প্রমাণ এবং
ব্যাংকে নির্ধারিত আবেদন ফরম জমা দিতে হয়। আবেদন প্রক্রিয়াটি সহজ দ্রুত,
জাতীয় প্রবাসীরা নিজেরা বা অনুমোদিত প্রতিনিধি মারফত সহজেই আবেদন
সম্পন্ন করতে পারেন। ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় আবেদনকারীর আয়, প্রবাসে
কর্মসংস্থানের ধরন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যাচাইয়ের ভিত্তিতে। সিটি ব্যাংক
প্রক্রিয়াটি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার চেষ্টা করা, যাতে গ্রাহকরা জরুরী
প্রয়োজনীয় অর্থ হাতে পান।
সবশেষে বলা যায়, সিটি ব্যাংকের প্রবাসী লোন প্রবাসীদের জন্য একটি
নির্ভরযোগ্য আর্থিক সহায়ক। এটি শুধু প্রবাসী বাংলাদেশীদের জীবনে কে সহজ
করেনা বরং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে। তাই বিদেশী কর্ম তো
বাংলাদেশীরা চাইলে এই সুবিধা নিয়ে আর্থিক পরিকল্পনাকে আরো স্থিতিশীল করতে
পারেন।
পাবলিক ব্যাংক
পাবলিক ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য বিশেষ প্রবাসী লোন সুবিধা প্রদান করে, যা
বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশীদের আর্থিক প্রয়োজন মেটাতে সহায়ক। অনেক প্রবাসী
পরিবারকে নিয়মিত লিমিটেন্স পাঠালেও হঠাৎ জরুরি ভাই বা বিনিয়োগের জন্য
অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হয়। এই প্রেক্ষাপটে পাবলিক ব্যাংকের প্রবাসী লোন
একটি কাজ করে সমাধান হিসেবে কাজ করে। পাবলিক ব্যাংক প্রবাসী লোন বাংলাদেশের
প্রবাসী নাগরিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সুবিধা।
আরো পড়ুন:ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি
এই লোন মূলত বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণের জন্য ডিজাইন
করা হয়েছে, যাতে তারা দেশে বিনিয়োগ করতে, ব্যবসা শুরু করতে বা পরিবার
পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সহজে পেতে পারেন। পাবলিক ব্যাংক প্রবাসী
লোনের জন্য প্রবাসীদের নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হবে, যেমন বৈধ প্রবাসী
পরিচয়, নিয়মিত আয় ও ব্যাংকে স্থায়ী সম্পর্ক। এই লোনের জন্য আবেদন করতে
হলে প্রয়োজন হয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন পাসপোর্ট কপি, প্রবাসী আইডি, এবং
ব্যাংকে যেকোনো সময় প্রমাণিত আয় সম্পর্কিত নথি।
লোনের পরিমাণ সাধারণত প্রবাসীর আয় এবং ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী নির্ধারিত
হয়, যা ছোট বা বড় ব্যবসা শুরু, বাড়ি নির্মাণ, বা শিক্ষা খাতে বিনিয়োগের
জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এই লোনের সুদের হার প্রতিযোগিতামূলক এবং সাধারণত
অন্যান্য ব্যক্তিগত ঋণের তুলনায় কম রাখা হয়, যা প্রবাসীদের জন্য আর্থিকভাবে
সুবিধাজনক। এছাড়া, লোন চুক্তির শর্তাবলি পরিষ্কারভাবে নির্ধারিত থাকে, যেমন
কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা, সুদের হার ও অন্যান্য শর্তাবলি, যা প্রবাসীদের
জন্য লোন গ্রহণকে আরও নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য করে।
পাবলিক ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রক্রিয়া সহজ এবং স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হয়, যাতে
প্রবাসীরা অপ্রয়োজনীয় জটিলতা এড়াতে পারেন। প্রবাসী নাগরিকদের জন্য এই লোন
একটি সুযোগ হিসাবে কাজ করে, যা তাদের দেশে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে
সহায়তা করে। দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান বাড়ানো এবং তাদের পরিবার ও
ব্যবসার স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পাবলিক ব্যাংক প্রবাসী লোন
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফলে, যারা বিদেশে আছেন এবং দেশে বিনিয়োগের সুযোগ
খুঁজছেন, তাদের জন্য এই লোন একটি সহজ ও নিরাপদ উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। সব
মিলিয়ে, পাবলিক ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রবাসীদের জন্য আর্থিক সহায়তা,
নিরাপত্তা এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার একটি কার্যকর উপায়
হিসেবে কার্যকর হয়।
বর্তমানে যে ব্যাংকগুলো প্রবাসী লোন দিচ্ছে
বর্তমানে বাংলাদেশের কিছু সংখ্যক ব্যাংকগুলোই প্রবাসী লোন প্রদান করে থাকছে।
তো চলুন দেখে আসা যাক বর্তমানে কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করছে।
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক(Probashi Kallyan Bank)
- এন আর বি ব্যাংক(NRB Bank)
- এনআরবিসি ব্যাংক(NRBC Bank)
- মিডল্যান্ড ব্যাংক(Midland Bank)
- বিআরএসসি ব্যাংক(BRAC Bank)
- উত্তরা ব্যাংক(Uttara Bank)
এনসিসি ব্যাংক
এনসিসি ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ
আর্থিক সহায়তা যা তাদের দেশের পরিবারের আর্থিক চাহিদা পূরণে সহায়ক। এই ঋণটি
মূলত প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদের নামে প্রদান করা হয় যারা নির্দিষ্ট
যোগ্যতা পূর্ণ করেন। ঋণের পরিমাণ সাধারণত BDT 100,000 থেকে 2,000,000 পর্যন্ত
হতে পারে এবং মেয়াদ ১ থেকে ৫ বছর। প্রার্থীকে ন্যূনতম ২১ বছর বয়সী হতে হবে
এবং সর্বোচ্চ বয়স ৬৫ বছর, তবে বেতনভোগীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৬০ বছর বা
অবসরের বয়স প্রযোজ্য।
যোগ্যতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে চাকরিপ্রার্থী বা স্বনিযুক্ত পেশাজীবী হলে
ন্যূনতম দুই বছরের অভিজ্ঞতা এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে তিন বছরের অভিজ্ঞতা।
প্রবাসী আয় প্রমাণিত হতে হবে রেমিট্যান্সের মাধ্যমে। প্রয়োজনীয় দলিলপত্র
হিসেবে পূর্ণাঙ্গ ঋণ আবেদন ফর্ম, প্রার্থী ও স্ত্রীর ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র,
ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আয়কর শনাক্তকরণ নম্বর (TIN), ইউটিলিটি বিল এবং
চাকরিপ্রার্থী বা ব্যবসায়ীদের জন্য প্রাসঙ্গিক সনদপত্র থাকা আবশ্যক। এই
সুবিধার মাধ্যমে প্রবাসীরা তাদের পরিবারের জরুরি আর্থিক চাহিদা মেটাতে পারেন
এবং বিস্তারিত তথ্যের জন্য এনসিসি ব্যাংকের শাখা বা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে
যোগাযোগ করা যেতে পারে।
শেষ কথা: কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়-আমার মতামত
বাংলাদেশে প্রবাসীদের জন্য ঋণ সুবিধা প্রদানকারী ব্যাংকগুলো তাদের আর্থিক
চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এনসিসি ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য
হোম লোন সুবিধা প্রদান করে, যা তারা বিদেশ থেকেও পরিশোধ করতে পারে। এছাড়া,
ব্র্যাক ব্যাংক প্রবাসী ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে, যা প্রবাসীদের জন্য একক
ব্যাংকিং সমাধান হিসেবে কাজ করে। অগ্রণী ব্যাংক প্রবাসী কর্মীদের জন্য
'ওভারসিজ ওয়ার্কার লোন অফার করে, যা তাদের বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য
প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করে।
এমডিবি ব্যাংকও প্রবাসীদের জন্য রেমিট্যান্স পার্সোনাল লোন প্রদান করে, যা
বিদেশ থেকে আয় প্রাপ্তির মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়। এই ব্যাংকগুলো তাদের
প্রবাসী গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ঋণ সুবিধা প্রদান করে, যা তাদের দেশে
পরিবারের আর্থিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করে। প্রতিটি ব্যাংকের ঋণ সুবিধার
শর্তাবলী ও প্রক্রিয়া ভিন্ন হতে পারে, তাই প্রবাসীদের জন্য উপযুক্ত ব্যাংক ও
ঋণ পণ্য নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। আজকে এ পর্যন্তই, অবশ্যই অন্য একটি
পোস্টে আপনাদের জন্য কোন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। ততক্ষণ
আপনারা সুস্থ থাকবেন। আগামী পোস্ট পড়ার জন্য সবার শুভেচ্ছা থাকলো।



লাইফ ব্লেন্ড আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url