বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে, এই প্রশ্নটি এখন অনেকের মনেই ঘুরছে।
পড়াশোনা, চাকরি, ভ্রমণ বা স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে নরওয়ে যেতে চাইলে
খরচ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা খুব জরুরি। কারণ নরওয়ে ইউরোপের অন্যতম
ব্যয়বহুল দেশ, আর যাত্রার খরচ শুধু বিমান টিকিটেই সীমাবদ্ধ নয়। ভিসা ফি,
ডকুমেন্টেশন, মেডিকেল, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স এবং প্রাথমিক থাকা ও খাবারের খরচ
সব মিলিয়ে একটি বড় বাজেট তৈরি হয়। এই আর্টিকেলে বাস্তব তথ্যের ভিত্তিতে
মোট খরচের একটি পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হবে।
পোস্টটি শুরু করার আগে আপনাদের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, অবশ্যই পোস্টটি
শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সম্পর্কে জানবেন এবং তা
সঠিকভাবে প্রয়োগ করবেন। পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনারা এ পোস্টের
গুরুত্বপূর্ণ সব কথাগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং তা প্রয়োগ করতে কোন
অসুবিধা হবে না বা প্রয়োগের পরও কোন অসুবিধা হবে না। আপনাদের সুবিধার্থে
পোষ্টের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো পেজ সূচিপত্র আকারে তুলে ধরা হলো।
পেজ সূচিপত্র:বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে
- বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে
- নরওয়ে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ও ভিসার ধরন
- নরওয়ে ভিসা ফি ও আবেদন সংক্রান্ত খরচ
- বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে বিমান টিকিটের খরচ
- মেডিকেল, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স ও অন্যান্য বাধ্যতামূলক খরচ
- নরওয়ে পৌঁছানোর পর থাকার খরচ
- খাবার ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ
- স্টুডেন্ট ও ওয়ার্ক ভিসার অতিরিক্ত খরচ বিশ্লেষণ
- কম খরচে নরওয়ে যাওয়ার বাস্তব টিপস
- শেষ কথা:বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে তা জানার আগ্রহ এখন অনেকেরই আছে,
বিশেষ করে যারা ইউরোপে নতুন সুযোগ খুঁজছেন। নরওয়ে যেতে খরচ নির্ভর করে
আপনি কোন উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন তার ওপর। টুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা বা
ওয়ার্ক ভিসা অনুযায়ী ব্যয়ের ধরন আলাদা হয়। সাধারণভাবে বাংলাদেশ থেকে
নরওয়ে বিমান টিকিটের খরচ একটি বড় অংশ দখল করে, যেখানে এয়ারলাইন,
ট্রানজিট এবং ভ্রমণের সময় অনুযায়ী দাম কম বেশি হতে পারে।
আরো পড়ুন:ইতালি শহরের লিস্ট
এর পাশাপাশি নরওয়ে ভিসা ফি, আবেদন প্রসেসিং চার্জ, মেডিকেল টেস্ট এবং
ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স মিলিয়ে ভালো অঙ্কের টাকা লাগে। যারা পড়াশোনার জন্য
যান, তাদের টিউশন ফি ও প্রাথমিক থাকা খরচ আগেই হিসাব করে নিতে হয়। আবার
কাজের উদ্দেশ্যে গেলে ওয়ার্ক পারমিট সংক্রান্ত কিছু অতিরিক্ত খরচ যুক্ত
হয়।
নরওয়ে পৌঁছানোর পর থাকার জায়গা, খাবার এবং লোকাল যাতায়াতের খরচও মাথায়
রাখা জরুরি, কারণ দেশটি জীবনযাত্রার খরচের দিক থেকে বেশ ব্যয়বহুল। তাই আগে
থেকেই বাজেট ঠিক করে পরিকল্পনা করলে নরওয়ে যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটা অনেক
সহজ হয়ে যায়।
নরওয়ে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ও ভিসার ধরন
নরওয়ে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ও ভিসার ধরন বোঝা খুব জরুরি, কারণ এখান
থেকেই পুরো আবেদন প্রক্রিয়া ঠিক হয়ে যায়। বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে
যারা আগ্রহী, তাদের বেশিরভাগই চারটি কারণে আবেদন করেন। প্রথমটি হলো ভ্রমণ।
নরওয়ে টুরিস্ট ভিসা সাধারণত অল্প সময়ের জন্য দেওয়া হয় এবং এটি দিয়ে
পাহাড়, ফিয়র্ড, শহর ও প্রকৃতি ঘুরে দেখার সুযোগ থাকে।
দ্বিতীয় বড় কারণ পড়াশোনা। নরওয়ে স্টুডেন্ট ভিসা তাদের জন্য, যারা
বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে চান। এই ভিসায়
সাধারণত পড়াশোনার পাশাপাশি সীমিত কাজ করার সুযোগও থাকে। তৃতীয় উদ্দেশ্য
চাকরি। নরওয়ে ওয়ার্ক ভিসা পেতে হলে আগে থেকেই জব অফার থাকতে হয় এবং
নির্দিষ্ট দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা দেখাতে হয়।
আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, নির্মাণ ও স্বাস্থ্য খাতে এই ভিসার চাহিদা বেশি দেখা
যায়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো পরিবার। নরওয়ে ফ্যামিলি ভিসা মূলত
তাদের জন্য, যাদের জীবনসঙ্গী বা নিকট আত্মীয় ইতিমধ্যে নরওয়েতে বৈধভাবে
বসবাস করছেন। প্রতিটি ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ এবং সময় আলাদা
হয়। তাই নরওয়ে ভিসা আবেদন করার আগে নিজের উদ্দেশ্য পরিষ্কার করা খুব
দরকার। সঠিক ভিসা ধরন বেছে নিতে পারলে আবেদন প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং নরওয়ে
যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই বেড়ে যায়।
নরওয়ে ভিসা ফি ও আবেদন সংক্রান্ত খরচ
নরওয়ে ভিসা ফি ও আবেদন সংক্রান্ত খরচ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকলে
অনেকেই মাঝপথে ঝামেলায় পড়ে যান। বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে ভিসা আবেদন করতে
গেলে প্রথম যে খরচটা সামনে আসে, সেটি হলো ভিসা ফি। ভিসার ধরন অনুযায়ী এই
ফি ভিন্ন হয়। টুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা কিংবা ওয়ার্ক ভিসার জন্য
আলাদা আলাদা চার্জ নির্ধারিত থাকে।
এর সঙ্গে যোগ হয় অনলাইন আবেদন ফি এবং ভিসা সেন্টারের সার্ভিস চার্জ, যা
আবেদনকারীদের অবশ্যই দিতে হয়। ভিসা ফি ছাড়াও আরও কিছু খরচ থাকে, যেগুলো
অনেক সময় মানুষ হিসাবের বাইরে রাখে। যেমন ডকুমেন্ট প্রস্তুতের খরচ। ব্যাংক
স্টেটমেন্ট, স্পনসর পেপার, অনুবাদ কাগজ বা নোটারি করলে অতিরিক্ত টাকা লাগে।
আরো পড়ুন:টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে-জানুন
মেডিকেল টেস্ট ও ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সও নরওয়ে ভিসা আবেদনের গুরুত্বপূর্ণ
অংশ, এগুলোর জন্য আলাদা বাজেট রাখতে হয়। স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে টিউশন
ফি বা ফান্ডের প্রমাণ দেখাতে গিয়ে বড় অঙ্কের টাকা একসাথে দেখানোর
প্রয়োজন হয়। আরেকটি বিষয় হলো অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেট ও প্রসেসিং সময়।
দ্রুত প্রসেসিং চাইলে কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচ হতে পারে। যারা এজেন্সির
মাধ্যমে আবেদন করেন, তাদের সার্ভিস চার্জও যুক্ত হয় মোট খরচের সঙ্গে। তাই
নরওয়ে ভিসা ফি শুধু একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক নয়, বরং আবেদন প্রক্রিয়ার
প্রতিটি ধাপে ছোট ছোট খরচ মিলেই পুরো বাজেট তৈরি হয়। আগে থেকেই এসব বিষয়
জেনে নিলে আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে বিমান টিকিটের খরচ
বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে বিমান টিকিটের খরচ জানতে চাইলে আগে বুঝতে হবে এটি
একটি নির্দিষ্ট দামের বিষয় নয়। টিকিটের দাম অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে,
যেমন কোন মাসে যাচ্ছেন, কোন এয়ারলাইন্সে ভ্রমণ করছেন এবং ফ্লাইটে কতবার
ট্রানজিট আছে। সাধারণভাবে ঢাকা থেকে নরওয়ে যেতে সরাসরি ফ্লাইট খুব কম
পাওয়া যায়, তাই এক বা দুই স্টপ ট্রানজিট ফ্লাইটই বেশি ব্যবহৃত হয়।
ট্রানজিট যত বেশি হবে, ভ্রমণের সময় যেমন বাড়ে, তেমনি খরচেও পার্থক্য দেখা
যায়। বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যাওয়ার ফ্লাইটে সাধারণত কাতার, তুরস্ক, দুবাই
বা ইউরোপের অন্য কোনো শহর হয়ে যেতে হয়। এসব রুটে টিকিটের দাম মৌসুমভেদে
কম বেশি হয়। গরমের ছুটি, বড়দিন বা ইউরোপের ট্যুরিস্ট সিজনে বিমান টিকিটের
খরচ অনেক বেড়ে যায়।
আবার অফ সিজনে একই টিকিট তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়। আগেভাগে বুকিং
করলে বেশিরভাগ সময় সাশ্রয়ী রেট পাওয়া সম্ভব হয়। এয়ারলাইন্স ভেদেও
দামের পার্থক্য থাকে। কিছু এয়ারলাইন্স কম দামে টিকিট দিলেও লাগেজ সুবিধা
কম থাকতে পারে, আবার কিছু এয়ারলাইন্সে ভাড়া একটু বেশি হলেও সার্ভিস ভালো
হয়।
স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক ভিসায় যাওয়ার সময় লাগেজ সুবিধা খুব গুরুত্বপূর্ণ
হয়ে দাঁড়ায়, তাই শুধু দাম নয়, শর্তগুলোও দেখে নেওয়া দরকার। সব মিলিয়ে
বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে বিমান টিকিটের খরচ ঠিক করতে হলে সময়, রুট এবং
এয়ারলাইন্স এই তিনটি বিষয় একসাথে বিবেচনা করাই সবচেয়ে বাস্তব সিদ্ধান্ত।
মেডিকেল, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স ও অন্যান্য বাধ্যতামূলক খরচ
নরওয়ে যেতে চাইলে শুধু বিমান টিকিট বা ভিসার খরচই নয়, কিছু বাধ্যতামূলক
খরচও আগে থেকেই মাথায় রাখা দরকার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মেডিকেল
পরীক্ষা। বেশিরভাগ নরওয়ে ভিসার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক,
যাতে প্রার্থী কোনো গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে দেশটিতে প্রবেশ না করে। বাংলাদেশে
এই পরীক্ষার খরচ তুলনামূলক কম হলেও ভিসা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এটি
গুরুত্বপূর্ণ।
আরেকটি বড় খরচ হলো ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স। নরওয়ে যাওয়ার আগে ভালো কভারেজের
ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স করা প্রয়োজন। এটি শুধু ভিসার জন্য নয়, চলাকালীন সময়ে
হঠাৎ অসুস্থতা বা দুর্ঘটনা হলে সুরক্ষা দেয়। ইন্স্যুরেন্সের দাম বিভিন্ন
কোম্পানি এবং কভারেজের সীমা অনুযায়ী কম-বেশি হয়। এই দুইয়ের পাশাপাশি কিছু
ছোটখাটো বাধ্যতামূলক খরচও থাকে।
আরো পড়ুন:ইতালিতে কয়টি শহর আছে-দেখুন
যেমন, ভিসা আবেদন প্যাকেজের জন্য ফটোকপি, অনুবাদ ও নোটারি খরচ, ব্যাংক
স্টেটমেন্ট প্রিন্ট করা, এবং কিছু ক্ষেত্রে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চার্জ। এই
খরচগুলো মিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট বাজেট তৈরি করা যায়।
যদি আগে থেকে এই সমস্ত বাধ্যতামূলক খরচের হিসাব রাখা হয়, তাহলে নরওয়ে
যাওয়ার সময় পরিকল্পনা অনেক সহজ হয়।
মেডিকেল, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স এবং অন্যান্য ছোটখাটো খরচ একসাথে দেখলে
যাত্রার খরচের রিয়েলিস্টিক ধারণা পাওয়া যায় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা কমে।
তাই বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যাত্রার আগে এই সব বিষয়গুলো বিবেচনা করা খুব
গুরুত্বপূর্ণ।
নরওয়ে পৌঁছানোর পর থাকার খরচ
নরওয়ে পৌঁছানোর পর থাকার খরচের কথা আগে থেকেই বোঝা খুব জরুরি। দেশে বিমান
টিকিট এবং ভিসার খরচের পরে থাকার খরচ সবচেয়ে বড় বাজেটের অংশ হতে পারে।
সাধারণভাবে হোটেল বা এপার্টমেন্ট ভাড়া নরওয়েতে অনেক বেশি। ছোট শহরে
তুলনামূলক কম খরচ হলেও বড় শহর যেমন অ Oslo, Bergen বা Trondheim-এ মাসিক
ভাড়া অনেক বেশি।
ছোট ফ্ল্যাট ভাড়া করলে দৈনন্দিন খরচও বাড়ে। গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ এবং
ইন্টারনেট খরচও যুক্ত হয়। যারা রুমশেয়ার বা হোস্টেল বেছে নেন, তারা
কিছুটা সাশ্রয় করতে পারেন। তবে হোস্টেল বা শেয়ারড এপার্টমেন্টে থাকলে
ব্যক্তিগত সুবিধা কম থাকে। খাবারের খরচও মাথায় রাখা দরকার। নরওয়ে
সুপারমার্কেটে সাধারণ খাদ্যদ্রব্য তুলনামূলক দামী।
বাইরে খেতে গেলে প্রতি খাবারের খরচ অনেক বেশি। তাই অনেকেই বাসা ভাড়া নিলে
নিজে রান্না করার চেষ্টা করেন। লোকাল যাতায়াতও খরচে প্রভাব ফেলে। পাবলিক
ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করলে অনেকটাই সাশ্রয় হয়। আবার বাইক বা ছোট গাড়ি
ভাড়া দিলে অতিরিক্ত খরচ লাগবে। মোটমাট, নরওয়ে পৌঁছানোর পরে থাকার খরচ
ফ্ল্যাট, হোটেল, খাবার এবং যাতায়াত মিলিয়ে অনেকাংশেই নির্ধারিত হয়। আগে
থেকেই বাজেট ঠিক করলে দেশটিতে থাকা অনেক সহজ এবং ঝামেলাহীন হয়।
খাবার ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ
নরওয়ে পৌঁছানোর পরে খাবার এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ অনেকের জন্য নতুন
চ্যালেঞ্জ হতে পারে। দেশটি সাধারণভাবে ব্যয়বহুল, তাই আগে থেকেই বাজেট ঠিক
রাখা জরুরি। সুপারমার্কেটে সাধারণ খাবারের দাম বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশি।
দুধ, ব্রেড, চিনি বা মাছের মতো জিনিসের দাম তুলনামূলকভাবে অনেক।
বাইরে খেতে গেলে রেস্টুরেন্টের খরচ আরও বেশি হয়। একবারের খাবারের জন্য
সাধারণত বড়ো অঙ্ক খরচ করতে হয়। দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচও কম নয়। পাবলিক
ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করলে অনেকটাই সাশ্রয় হয়। বাস, ট্রাম বা ট্রেনের
ভাড়া কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি বা ট্যাক্সি ব্যবহার
করলে খরচ অনেক বেড়ে যায়।
আরো পড়ুন:কুয়েতে যেতে কত টাকা লাগে বিস্তারিত
নরওয়েতে ইন্টারনেট এবং মোবাইল খরচও মনে রাখার মতো। অনেক সময় সিম কার্ড
কিনে ডেটা প্ল্যান নেওয়াই সাশ্রয়ী হয়। জীবনযাত্রার জন্য ছোট ছোট
পরিকল্পনা অনেক সাহায্য করে। নিজের জন্য সপ্তাহের খাবার পরিকল্পনা করা,
সুপারমার্কেটের ডিস্কাউন্ট ব্যবহার করা এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ভ্রমণ করা
অনেক খরচ বাঁচায়।
স্টুডেন্ট বা নতুন অভিবাসীদের জন্য এই পরিকল্পনা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
মোটমাট, নরওয়ে পৌঁছানোর পর খাবার ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচকে আগে থেকেই
বুঝে পরিকল্পনা করা গেলে দেশের ব্যয়বহুল পরিবেশে থাকা অনেক সহজ হয়। সঠিক
বাজেটের সঙ্গে খরচ নিয়ন্ত্রণ করলে নরওয়ে জীবন আরামদায়ক এবং ঝামেলাহীন
হয়ে ওঠে।
স্টুডেন্ট ও ওয়ার্ক ভিসার অতিরিক্ত খরচ বিশ্লেষণ
স্টুডেন্ট ও ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে নরওয়ে যাওয়ার সময় অতিরিক্ত খরচ অনেকের
জন্য নতুন বিষয়। শুধু ভিসা ফি বা বিমান টিকিট নয়, এই দুই ধরনের ভিসায়
কিছু বিশেষ খরচও থাকে। স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সবচেয়ে বড় খরচ হলো পড়াশোনার
ফি এবং প্রাথমিক ফান্ড। নরওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ভর্তি হতে হলে
টিউশন ফি বা ব্লক অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা রাখতে হয়।
এই টাকা দেখানো প্রয়োজন যাতে প্রমাণ হয় যে শিক্ষার্থী দেশটিতে থাকার সময়
নিজেকে আর্থিকভাবে সাপোর্ট করতে পারবে। স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে আরও খরচ
আসে থাকার ব্যবস্থা এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রার জন্য। হোস্টেল বা রুম ভাড়া,
খাবার, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এবং মোবাইল ডেটার জন্য ছোটখাটো খরচ মিলিয়ে মোট
বাজেট অনেক বেড়ে যায়।
বিশেষ করে বড় শহরে জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলক বেশি। ওয়ার্ক ভিসা থাকলে
আলাদা কিছু খরচ যোগ হয়। আগে থেকেই জব অফার এবং পারমিট ফি দিতে হয়। কাজের
জন্য প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট বা কাগজপত্রের অনুবাদ ও নোটারি করানোও
অতিরিক্ত খরচ। কেউ কেউ এজেন্সি ব্যবহার করলে সার্ভিস চার্জও যুক্ত হয়।
এছাড়া যাতায়াতের জন্য যন্ত্রপাতি বা প্রয়োজনীয় পোশাক কিনতেও টাকা খরচ
হয়। মোটমাট, স্টুডেন্ট এবং ওয়ার্ক ভিসা দুটি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচ
নির্ধারিত। আগে থেকে সব খরচের হিসাব করলে বাজেট মেইনটেইন করা সহজ হয়।
বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যাওয়ার সময় এই অতিরিক্ত খরচের বিষয়গুলো মাথায়
রাখলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা কমে এবং যাত্রা অনেক স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হয়।
কম খরচে নরওয়ে যাওয়ার বাস্তব টিপস
নরওয়ে যাওয়া অনেকের জন্য স্বপ্নের মতো মনে হলেও বাজেটের দিকে মন দিয়ে না
গেলে খরচ অনেক বেড়ে যায়। তাই কম খরচে নরওয়ে যাওয়ার জন্য কিছু বাস্তব
টিপস জানা খুব দরকার। প্রথমে, বিমান টিকিট বুক করার সময় সাশ্রয়ী সুযোগ
খুঁজে বের করা জরুরি। অফ সিজনে বা আগেভাগে টিকিট বুক করলে অনেক টাকা
বাঁচানো যায়।
ট্রানজিট ফ্লাইটও অনেক সময় সরাসরি ফ্লাইটের তুলনায় কম খরচে পাওয়া যায়।
দ্বিতীয়, থাকা-খাওয়ার খরচ কমানোর জন্য হোস্টেল, রুমশেয়ার বা
অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেওয়া ভালো। ছোট শহরে থাকলে খরচ আরও কম হয়। নিজের
জন্য খাবার রান্না করলে রেস্টুরেন্ট খরচ অনেক কমে। সুপারমার্কেটে
ডিস্কাউন্ট পণ্য কিনেও সাশ্রয় করা সম্ভব।
তৃতীয়, যাতায়াতের জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা বেশি সুবিধাজনক।
বাস, ট্রাম বা ট্রেন ব্যবহার করলে ট্যাক্সি খরচ অনেক কমে। কিছু শহরে সাইকেল
ভাড়া নিলেও দৈনন্দিন যাতায়াত সহজ হয়। চতুর্থ, ভিসা, মেডিকেল পরীক্ষা এবং
ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সের খরচ আগে থেকেই ঠিক করে রাখা দরকার। আগে থেকে বাজেট
তৈরি করলে অপ্রত্যাশিত খরচ কম হয়।
এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক ভিসা থাকলে ব্লক অ্যাকাউন্ট বা
প্রাথমিক ফান্ড দেখাতে হয়, যা আগে থেকেই পরিকল্পনা করলে সুবিধা হয়।
মোটমাট, কম খরচে নরওয়ে যাওয়ার জন্য আগে থেকে পরিকল্পনা, সাশ্রয়ী টিকিট,
সস্তা থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা, এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা খুব
কার্যকর। এই বাস্তব টিপস মানলে বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যাওয়া অনেক সহজ এবং
ঝামেলাহীন হয়ে ওঠে।
শেষ কথা:বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যেতে মোট খরচ অনেকটাই ব্যক্তিগত পরিকল্পনা এবং
যাত্রার ধরনের ওপর নির্ভর করে। সাধারণ টিকিট, ভিসা ফি, মেডিকেল, ট্রাভেল
ইন্স্যুরেন্স, থাকা ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ মিলিয়ে যাত্রার বাজেট ঠিক
করা যায়। আমার মতে, যারা আগে থেকেই খরচ এবং পরিকল্পনা ঠিক রাখে, তাদের
জন্য নরওয়ে যাওয়া অনেক সহজ হয়।
বাজেটের দিকে মন দিলে সাশ্রয়ী ফ্লাইট বেছে নেওয়া, হোস্টেল বা সস্তা
ফ্ল্যাটে থাকা, এবং নিজে রান্না করা সম্ভব। ভিসা এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক
খরচ আগে থেকে মাথায় রাখলে অপ্রত্যাশিত ঝামেলা কমে। স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ফান্ডের হিসাব আগেভাগে ঠিক করা অনেক সাহায্য
করে।
সব মিলিয়ে, বাংলাদেশ থেকে নরওয়ে যাওয়া খরচকে বাস্তবসম্মতভাবে বিশ্লেষণ
করা দরকার। আগে থেকে সঠিক পরিকল্পনা এবং বাজেট ঠিক করলে যাত্রা সহজ,
আরামদায়ক এবং ঝামেলাহীন হয়। তাই আমার মতামত হলো, খরচ নিয়ে সতর্ক থাকলে
এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতি অবলম্বন করলে নরওয়ে যাত্রা অনেকটাই সাফল্যময় হয়ে
ওঠে।



লাইফ ব্লেন্ড আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url